ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪ | চৈত্র ১৫ ১৪৩০
ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০২৪       
banner

শেয়ার বাজারের শত কোটি টাকা লুটে নিয়েছে মাসুম চৌধুরী!

নিজস্ব প্রতিবেদক বঙ্গবাণী

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ৯ মার্চ ২০২৩

শেয়ার বাজারের শত কোটি টাকা লুটে নিয়েছে মাসুম চৌধুরী!

মাসুম চৌধুরী

শেয়ার বাজার কারসাজির অন্যতম আসামী মাসুম চৌধুরী। বিভিন্ন নামে কোম্পানি খুলে শেয়ার বিক্রির নামে গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তার এই প্রতারণায় নিঃস্ব হয়েছে অনেকেই। নিজের আপন ভাই -বোন রেহাই পায়নি তার হাত থেকে।

শেয়ারবাজার কারসাজিতে গত জানুয়ারির ১১ তারিখে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ এর ট্রাস্টি সচিব বাদীহয়ে পল্টন থানায় মাসুম চৌধুরীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে দুই শত সাত কোটি আটচল্লিশ লক্ষ চুয়াত্তর হাজার একশত সতেরো টাকা আত্নসাতের মামলা করেছে। ঐ মামলা তদন্ত করছে সিআইডির ফিনানশিয়াল ক্রাইম টিম। বিষয়টি জানিয়েছেন ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ এর ট্রাস্টি সচিব সোহেল আহমেদ।

মাসুম চৌধুরী ২০০৯ সালে Universal Financial Solution Ltd. (UFSL) নামে এসেট মেনেজমেন্ট কোম্পানি তৈরি করে। যেটাতে টানা ১৩ বছর পরিচালনা বোর্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বোর্ডের সবাই মিলে এই প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫৮ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা ও ৮ টি মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা ব্যাংকের থেকে তুলে নেন বিদেশে পাচার করার জন্য। আর এই কারণেই ১১ জানুয়ারি পল্টন থানায় মামলাটিতে তাকে অন্যতম আসামী করা হয়।

মাসুম চৌধুরীর রয়েছে ভয়ঙ্কর বৈচিত্র্যময় প্রতারণার গল্প। তার প্রবাসী ভাই মামুন চৌধুরী জানান, জীবনের প্রথম দিকে দাখিল পরিক্ষায় নকল করতে গিয়ে ধরা পরে হয়েছেন এক্সফেল। তবে বসে থাকেননি তিনি। এর পর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নকল সার্টিফিকেট নিয়ে নামের পাশে বসিয়েছেন ডক্টরেট ডিগ্রি, বসিয়েছেন অধ্যাপক পদবীও। কিন্তু এর সবই ভূয়া। 

এইসব ভূয়া পদবী লাগিয়ে নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে করছেন নানা ধরনের প্রতারণা। ভূয়া কোম্পানি খুলে মানুষের অর্থ আত্মসাৎ, শেয়ার বাজার কারসাজি! এমনকী তার প্রতারণা থেকে পরিবারের সদস্যরাও বাদ পরেননি। রয়েছে একাধিক মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও। 
মাসুম চৌধুরী নামের এই প্রতারককে খুঁজছে আইন শৃঙখলা বাহিনী। গা ঢাকা দিয়ে আছে দীর্ঘ দিন হতে। বন্ধ আছে তার ব্যক্তিগত সেল নম্বরটিও।

মামুন চৌধুরী আরো বলেন, এর আগে এলিট ল্যান্ড লিমিটেড নামের একটি ভূয়া কোম্পানির নামে প্রতারণায় তার বিরুদ্ধে জারি হয়েছিলো গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও।

এদিকে চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় র্যাং গস ভবনের নিচতলায় পার্কিং ও ট্রাফিক পুলিশের রেস্টরুমকে কারসাজি করে টেন্ডার ছাড়াই নিজের দখলে নিয়ে দোকান বাণিজ্য চালিয়ে আসছে মাসুম চৌধুরী।

মো. আনোয়ার নামের এক প্রবাসী চট্টগ্রাম খুলশী থানায় মামলায় তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা হলে চট্টগ্রাম কোর্টে আগাম জামিন নেয়। যা এখনো হাইকোর্টে চলমান আছে। 

মামুন চৌধুরী বলেন, আমার সামাজিক কর্মকাণ্ডের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ওপর হামলা করে। মসজিদে দুই ভাই জুমার নামাজ পড়ে ফেরার সময় ১২/১৩ জন পেশাদার ঘাতকদের নিয়ে মাসুম চৌধুরীর বড় ভাই মাহফিজ চৌধুরীর সামনে আমাকে প্রচণ্ড পরিমাণ আঘাতে কারণে রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে মাঠিতে লুটিয়ে পড়লে বড় ভাই মাহফুজ চৌধুরী মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করান।

এ ঘটনায় আমি কিছুটা সুস্থ হয়ে হাটহাজারী থানায় মাসুম চৌধুরীকে প্রধান আসামী করে তার সঙ্গীদের নামে মামলা করি। কিন্তু সে মামলা থেকে অজ্ঞাত কারণে মাসুম চেীধুরীর নাম বাদ দেওয়া হয়। এছাড়া আমার অন্য চার ভাই-বোন এই মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় তাদেরকে গ্রামের  পৈত্রিক ভিটাবাড়ি ছাড়া করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। 

এতো কিছুর পরও ধরা ছোঁয়ার বাইরে প্রতারক মাসুম চৌধুরী। পরিবারের সদস্য ও বাইরের প্রতারিত সকল ভুক্তভুগিদের দাবী মাসুম চৌধুরীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক বলে দাবী।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে কথাবলতে মাসুম চৌধুরীর ব্যবহৃত ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

বঙ্গবাণীডটকম/এমএস

আইন-আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত