ঢাকা, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫ | কার্তিক ২২ ১৪৩২
ঢাকা, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫       
Shruhid Tea

কৃষিজমি রক্ষায় জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি

মাসুদ রানা, মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি  বঙ্গবাণী

প্রকাশিত: ১৮:৫১, ১৮ আগস্ট ২০২১

কৃষিজমি রক্ষায় জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি

ছবি- বঙ্গবাণী

মোংলা বন্দরের ড্রেজিংয়ের কবল থেকে কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে চিলা ইউনিয়নের এলাকাবাসী। মঙ্গলবার চিলা জয়মনির ঘোল এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকরা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদারের হাতে গনস্বাক্ষরিত স্মারকলিপি প্রদান করেছে। এসময় ওই সকল ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের উপজেলা প্রশাসন যথাযত ব্যাবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।

দেশী-বিদেশী পন্য বোঝাই বানিজ্যিক জাহাজ আগামন-নির্গমন সহজ করতে ৭শ ৯৪ কোটি টাকা ব্যায় পশুর নদীর ইনারবার ড্রেজিং প্রকল্প হাতে নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। আর এ ড্রেজিয়ের খননকৃত বালু ফেলতে জয়মনি এলাকায় ১৫শ একর জমি নির্ধারন করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে চিলা ইউনিয়নের জয়মনির ঘোল, কলাতলা,সুন্দরতলা, আমতলা, গাববুনিয়া, কেয়াবুনিয়া ও তেলীখালী এলাকায় মলিকানা কৃষিজমি রয়েছে ৭শ একর কিন্ত জমির আসল মালিকদের না জানিয়ে জোর পুর্বক ডাইক (ভেড়িবাধ) নির্মান করছে ড্রেজিং কোম্পানীর লোকজন বলে দাবী স্মারকলিপি প্রদানকারীদের। 

কয়েকশ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর এ ৭শ একর কৃষিজমির ক্ষতি না করার দাবীতে ১৭ আগস্ট মঙ্গলবার মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে কৃষকের গনস্বাক্ষরিত স্মারকলিপি প্রদান করেন। 

এর আগেও মানববন্ধন, সাংবাদক সম্মেলন ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও দিয়েছে জমির প্রকৃত মালিকরা। তাদের দাবি এ অঞ্চলের গরিব ও অবহেলীত মানুষের এক মাত্র উপার্জন পথ হচ্ছে কৃষি ও চিংড়ি চাষ। যা দিয়ে তাদের ছেলে-মেয়ে ও পরিবার পরিজন নিয়ে বেচে থাকার এক মাত্র অবলম্বন এ কৃষিজমি। 

তাদের দাবী, বাব দাদার রেখে যাওয়া জমিতে ধান, কৃষি আর চিংড়ি চাষ করে কোন রকম পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল কিন্ত তাদের এই শেষ সম্ভলটুকু হারাতে চায়না বলেও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করে। 

স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার রাজবংশী, কৃষিজমির মালিক মাফতুন আহমেদ মুকুল, জালাল উদ্দিন, হুমায়ুন কবির, আবু হানিফ ফকির, মুকুল শিকদার, মোঃ আলম গাজী, বিজন কুমার বৈদ্যসহ আরো অনেকে। 

এসময় নির্বাহী কর্মকর্তার সামনে কৃষকরা আরো বলেন, আমরা বংশ পরম্পরায় নিজেদের জমিতে কৃষি, ধান ও মাছ চাষ করে জীবন চলে। বন্দরের উন্নয়ন চাই কিন্ত আমাদের কৃষি জমিতে মোংলা বন্দরকে পশুর নদীর ড্রেজিংয়ের বালু ফেলতে দেবো না। আমরা কোন তিপূরণও চাই না। কৃষি, ধান ও মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতে চাই। 

তাদের দাবি কোন ধরনের আলাপ-আলোচনা ছাড়াই বন্দর কর্তৃপ ২৫/৩০ ফুট ডাইক নির্মান করে বালু ফেলছে। এরফলে প্রবাহমান সরকারি খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। রাস্তাঘাট মানুষের চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আশেপাশের মৎস্য খামার ও বাড়ী ঘরের তি হচ্ছে। 

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, চিলা ইউনিয়নের কৃষকরা জেলা প্রশাসক মহাদয়কে আমার মাধ্যমে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে। সপ্তাহ খানেক আগে আমি ও বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধরা ড্রেজিং প্রকল্পের এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এলাকার সাধরণ মানুষের যেন কোন রকম ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এব্যাপারে খুব শিগ্রই একটি সুষ্ঠ সামাধানের ব্যাবস্থা করা বলে জানায় এ কর্মকর্তা। 

বঙ্গবাণীডটকম/এমএস

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত